আলু চাষ করে বিপাকে পড়েছে কৃষক। আলু চাষ করে এখন তাদের উৎপাদন খরচই ওঠছে না।
কৃষকরা এবার আলুর উচ্চ মূল্য আশা করে ব্যাপক ভাবে আলু চাষে ঝুকে পড়ে। সবে আলু ওঠতে শুরু করায় কৃষকের সেই আশায় গুড়েবালি হতে চলেছে। বাগমারায় কমতে শুরু করেছে আলুর বাজার দর। কৃষকরা বলেছেন এই দামে আলু বিক্রি করে তাদের উৎপাদন খরচ ওঠবে না। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন খুব অল্প পরিমান জমি থেকে আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে। ব্যাপক ভাবে আলু উত্তোলন শৃুরু হলে আলুর দরপতন আরো বেড়ে যাবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এই উপজেলায় এবার আলু চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল সাড়ে পঁাচ হাজার হেক্টর জমিতে। তবে গত বন্যায় আলুর দাম ব্যাপক বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা ভালো দামের আশায় লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে প্রায় সাড়ে পঁাচহাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ করে। উপজেলার মাড়িয়ার কৃষক আসাদুজ্জামান জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা। কাঠা প্রতি ৪ থেকে ৫ মণ হারে উৎপাদন হয়েছে। বিঘা প্রতি ফলন ৮০ থেকে ১০০ মণ। বর্তমানে ভবানীগঞ্জ হাট সহ বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা গেছে এখানে দেশি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪শ ৫০ টাকা থেকে ৫শ টাকা মণ দরে এবং হার্ডিনাল ও বার্মা জাতের আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতিমন ৪শ থেকে সাড়ে ৪শ টাকা দরে। কিছুদিন আগেও এলাকার কৃষকরা অপরিপক্ক আলু তুলে তা ১২শ থেকে ১৫শ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছিল। এতে তাদের ভালো লাভ টিকেছে। হামিরকুৎসার কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, ১০ কাঠা জমিতে আলু চাষ করতে তার খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। সেখানে ৫০ মণ হারে আলু উৎপাদন হয়েছে। সোমবার হাটে ওই আলু ১১ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে ২২ হাজার টাকা পেয়েছেন।
এত পরিশ্রম করে করেও তার তিন হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। একই ইউনিয়নের কৃষক আমিনুল ইসলাম জানান, গত বছর চড়া দাম দেখে এবার পঁাচ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বীজ কিনেছেন। সার কীটনাশক সেচ শ্রমিক সহ অন্যান্য খরচ তো রয়েছে। বর্তমানে আলুর বাজার দর দেখে তিনি দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এতে তার লোকসান গুনতে হবে। তবে আলুর বাজার দর আরো পড়ে যাওয়ার আশংকা করছেন তিনি। তিনি বলেন, এখনও পুরো দমে আলু ওঠা শুরু হয়নি। পুরো দমে আলু ওঠা শুরু হলে আলৃুর বাজার দর আরো পড়ে যাবে বলে তিনি ধারনা করছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, বাগামারা সহ আশে পাশের এলাকায় এখনও পুরোদমে আলু ওঠা শুরু হয়নি। তার মতে এভাবে আলুর ব্যাপক দরপতনে কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ভালো দাম পাওয়ার জন্য তিনি কৃষকদের আলু সংরক্ষনের পরামর্শ দিয়েছেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।